img

পার্থে দেড় দিনেই হেরে বসেছে ইংল্যান্ড। অ্যাশেজে পিছিয়ে পড়েছে ১-০ ব্যবধানে। এখন সামনে ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টের আগে প্রশ্ন উঠছে, দেড় দিনে প্রথম টেস্টে হারের পর কি বাজবল থেকে সরে আসবে ইংল্যান্ড?

ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ‘বাজ’ ম্যাককালাম অবশ্য সব সময়ই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের পক্ষে। ক্রিকেটার হিসেবে, অধিনায়ক হিসেবে এবং এখন কোচ হিসেবে তিনি কখনো পিছিয়ে যান না। তিনি আগে থেকেই নিজের সুনাম গড়ে নিয়েছিলেন আক্রমণাত্মক উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে। পরে নিউজিল্যান্ডকে ২০১৫ সালের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছিলেন। সেই টুর্নামেন্টেও তিনি প্রথম বল থেকেই আক্রমণ করেছেন। ফাইনালেও একই পথে হাঁটেন। কিন্তু মিচেল স্টার্কের এক দুর্দান্ত ইয়র্কারে তৃতীয় বলেই বোল্ড হন তিনি। পরে অবশ্য নিউজিল্যান্ড হার মানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে। কিন্তু ম্যাককালামের ভাবনায় কোনো বদল আসেনি।

বেন স্টোকসও সেই একই মানসিকতার। তিনি ম্যাককালামের সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য সঙ্গী। ড্রেসিং রুমে তারই দাপট। তিন বছর ধরে যে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছেন, সেখান থেকে সরে যাওয়া তার জন্যও কঠিন।

ইংল্যান্ড ১৯৫০–এর দশকের পর আর কখনো অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্ট হেরে সিরিজ জিততে পারেনি। তবুও স্টোকস ও ম্যাককালাম বিশ্বাস করেন তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট হেরেও তারা সিরিজ জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। ২০২৩ অ্যাশেজেও প্রথম দুই টেস্টে হারার পর বাকি তিন ম্যাচে ইংল্যান্ড আধিপত্য দেখিয়েছিল। যদিও অ্যাশেজ তারা ফিরে পায়নি।

পার্থে দুই দিনের বিশৃঙ্খলার মাঝেও অবশ্য ম্যাচ ইংল্যান্ডের হাতের মধ্যে ছিল। কিন্তু ৪০ মিনিটে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাজবল যেন নিজের অস্ত্র দিয়েই ইংল্যান্ডকে আঘাত করল।

প্রশ্ন এখন একটাই—অস্ট্রেলিয়ায় বাজবল আদৌ কাজ করবে কি না? অনেক বিশেষজ্ঞের সন্দেহ আছে। তাদের মতে, অস্ট্রেলিয়ার বাড়তি গতি ও বাউন্স ইংল্যান্ডের এমন ঝুঁকিপূর্ণ খেলা পাঁচ টেস্টে ধরে রাখতে দেবে না।

সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেল লিখেছেন, ‘(পার্থ) হয়তো সেই মুহূর্ত যখন টেস্ট ক্রিকেট নিজেকে নতুনভাবে পরিচয় করাল, অথবা সেই সময় যখন বাজবল অস্ট্রেলিয়ার কঠিন বাস্তবতার দেয়ালে ঠেকে ভেঙে পড়ল।’

কারো মতে, ট্রাভিস হেডের ৬৯ বলে সেঞ্চুরিই আসলে বাজবলের রূপ, শুধু ইংল্যান্ডের নয়, অস্ট্রেলিয়ার হাতে।

ব্রিসবেনের দিন-রাতের টেস্ট বাজবলের পথ বদলাবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া সব ১৩টি গোলাপি বলের টেস্টে ফল হয়েছে। চারটি ম্যাচই পাঁচ দিন পর্যন্ত গড়ায়নি। তাই গ্যাবায় আরেকটি দ্রুতলয়ের ম্যাচ দেখলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

ইংল্যান্ডের কাজ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ইতোমধ্যে গোলাপি বলে নেটে অনুশীলন করেছেন। তিনি পিঠের চোট থেকে সেরে গাবায় মাঠে নামতে চান।

তবু ইংল্যান্ড যদি ২-০ তে পিছিয়েও যায়, ম্যাককালাম ও স্টোকস তাদের খেলোয়াড়দের উপরই আস্থা রাখবেন। তারা বিশ্বাস করেন এর পরেও সিরিজ ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।

তবে সব শেষ হয়ে গেলে, তিন বছর ধরে চলা বাজবল যুগ মাত্র দুই সপ্তাহেই অস্ট্রেলিয়ায় বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ